প্রকাশিত: Sat, Jan 28, 2023 3:35 PM
আপডেট: Thu, Jul 3, 2025 2:32 PM

চার মিনিটে ৯ বার টাইরিকে আঘাত হানে মার্কিন পুলিশ, পিটিয়ে মারার ভিডিও ভাইরাল

রাশিদুল ইসলাম: মেম্পিস পুলিশ প্রধান বলেছেন, পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বশীল আচরণে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ও আইন মন্ত্রণালয়। পুলিশ টাইরি নিকোলসকে গাড়ি থেকে বের করে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। পুলিশের সাথে তার ধ্বস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন নিকোলস। দ্বিতীয় ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় ৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিকোলসকে মাটিতে চেপে ধরে হাতকড়া পরানোর চেষ্টা করছেন। কিছুক্ষণ পর এক কর্মকর্তা তার মুখে লাথি মারেন। পরক্ষণেই আবারও ওই কর্মকর্তা তাকে লাথি মারেন। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে মাটিতে ফেলে নির্যাতন করতে থাকেন তারা। একটু পর আরো এক পুলিশ কর্মকর্তা এসে তাকে পেটাতে শুরু করেন। আরেক পুলিশ তাকে একের পর এক ঘুষি মারতে থাকেন।

মার্কিন মিডিয়া সিএনএন প্রতিবেদনে বলা হয়, নিকোলসের ওপর চার মিনিটে ৯ বার আঘাত করে পুলিশ সদস্যরা। সবশেষ আরেক পুলিশ কর্মকর্তা মারধরে যোগ দেন। এসময় মোট ছয় পুলিশ কর্মকর্তাকে সেখানে উপস্থিত দেখা যায়। এক পর্যায়ে নিকোলস আহত অবস্থায় মাটিতে গড়াগড়ি খেতে থাকেন। তখনও তার ওপর নির্যাতন চলতে থাকে। ভিডিওটি প্রকাশের আগে নিকোলাসের মা রাভাগন এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বলেন, তিনি না দেখেই বুঝতে পারছেন ভিডিওটা কত ভয়ঙ্কর। কিন্তু ভিডিওর জের ধরে কোনো সহিংসতা হোক তা তিনি চান না। সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান রাভাগন ওয়েলস। রাভাগন ওয়েলস বলেন, তার ছেলে সব সময় বলতো যে, একদিন সে খুবই বিখ্যাত হবে। কিন্তু কে জানতো, তার বিখ্যাত হওয়ার গল্পটা এতটা নির্মম হবে। শোকাহত টাইরি নিকোলসের মা’কে শুক্রবার টেলিফোন করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি তাকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের বিচারে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

গত ৭ জানুয়ারি মেম্পিসে ২৯ বছর বয়সি কৃষ্ণাঙ্গ নিকোলাসকে ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে দাঁড় করায় পুলিশ। কিন্তু তাকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। ১০ জানুয়ারি হাসপাতালে তার মৃত্যু ঘটে। ওই ঘটনার একাধিক ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। সবচেয়ে বড় ভিডিওটি ৩১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের। সেখানে দেখা যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ২৮ মিনিট ধরে মারা হচ্ছে ওই কৃষ্ণাঙ্গকে। গলায় পা দিয়ে চলছে লাথির পর লাথি। হাঁটু দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে তলপেটে। কখনও চিৎকার করছেন ওই কৃষ্ণাঙ্গ কখনও ককিয়ে উঠছেন।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ছ’জন পুলিশ মিলে একজনকে পেটাচ্ছেন। যা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানাবে। একটি ছোট ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওই কৃষ্ণাঙ্গ পানি চাইছেন। কিন্তু পুলিশ তাকে পানির বদলে মুখের মধ্যে বুট দিয়ে লাথি মারছে। একসময় মার খেতে খেতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তিনি। তিন বার ‘মা’ বলে ডেকে উঠে নেতিয়ে পড়েন রাস্তায়।

এরপর তাকে তুলে যাওয়া হয় পুলিশ ভ্যানে তোলার জন্য। কার্যত বস্তার মতো ছুড়ে ফেলা হয় তাকে। তারপরও চলে মার। এ হেন ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যদিও পাঁচ পুলিশ অফিসারকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে মার্কিন পুলিশ। কিন্তু যে ভিডিও সামনে এসেছে তা সাংঘাতিক বললেও কম বলা হয়।