স্বপ্না চক্রবর্তী : কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ২৬ টাকা দরে আরও আড়াই লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এসময় কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। কৃষি মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের ১৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ আছে। এরপরও যদি ধানের দাম না বাড়ে তাহলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রান্তিক কৃষকের কাছে থেকে সরাসরি আরও ধান কিনবে সরকার। খাদ্য মন্ত্রী বলেন, এবার বোরোর ফলন ‘অনেক উদ্বৃত্ত’ হয়ে গেছে। দেশের খাদ্য গুদামগুলোর ধারণ ক্ষমতা ১৯ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। আর এখন গুদামে আছে ১৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য। তিনি বলেন, সোমবার প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা আরও আড়াই লাখ মেট্রিক টন ধান কৃষকের কাছ থেকে কিনবো। এতেও বাজার না উঠলে (ধানের) পরিমাণ আরও বাড়াবো, যেন কৃষক নায্যমূল্য পান।
এই আড়াই লাখ টনের বাইরে প্রয়োজনে আরও এক বা দুই লাখ মেট্রিক টন ধান কৃষকের কাছ থেকে কেনা হবে বলে জানান তিনি।
এবছর বোরো মৌসুমে সরকার ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং দেড় লাখ টন বোরো ধান এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। ঠিক হয়, ২৫ এপ্রিল থেকে প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা এবং প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকায় কিনবে সরকার। কিন্তু সরকারিভাবে ধান-চাল ক্রয় শুরু হতে দেরির কারণে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা সেই সুযোগ নেয়। তারা ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করলে ধান নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েন কৃষকরা। উৎপাদন খরচ না ওঠায় অসন্তোষ থেকে পাকা ধানে কৃষকের আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে। এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের বাঁচাতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মন্ত্রণালয়কে বেশি ধান কেনার ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্ক বাড়ানো হয়।
এ ব্যাপারে খাদ্য মন্ত্রী জানান, এখন পর্যন্ত কৃষকের কাছ থেকে ৩০ হাজার টন বোরো ধান কেনা হয়েছে। এক লাখ ২০ হাজার টন ধান কেনা এখনও বাকি আছে। আরও দেড় লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হওয়ায় এবার সব মিলিয়ে মোট চার লাখ টন বোরো ধান কৃষকের কাছ থেকে কিনবে সরকার। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান