টিংকুর সঙ্গে প্যারিসের লোভ্যর মিউজিয়ামে গিয়েছিলাম ১৯৯৭ সালে। মোনালিসা ছবিটির সামনে দাঁড়িয়ে টিংকু আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বলছিলো এই সেই রূপবতী নারী। যার রূপে ১৫০০ শতাব্দীর পুরুষকুল অন্ধ ছিলো। তাঁর রহস্যময় হাসি আজও বহু পুরুষের রাতের ঘুম হরণ করে। খুব ভালোভাবে তাকিয়ে দেখলাম কিন্তু কোনো সৌন্দর্য খুঁজে পেলাম না। চোখের উপরে ভ্রু ছাড়া একজন মহিলা রূপবতী হয় কী করে। তাঁর উপর ঈষৎ স্থূলকায়। ফট করে নির্লজ্জের মতো বলে ফেললাম, ‘আমার নিজেকে মোনা লিসার চেয়ে অনেক বেশি রূপবতী মনে হয়।’ টিংকু বিস্ময়ে হা হয়ে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ তারপর হেসে ফেললো। মোনা মানে মেডাম আর লিসা হচ্ছে সেই ধনাঢ্য মহিলার নাম। অনেকের মতে, ছবির জনক লিওনার্দো দা ভিঞ্ছির নিজের ফিমেল ভার্সন হচ্ছে মোনা লিসা। আবার অনেকের মতে, তিনি একজন ধনাঢ্য ব্যক্তির স্ত্রী।
মোনালিসা ছবিটি কাপড়ের ক্যানভাস নয়, কাঠের উপরে উন্নত রং তুলির ব্যবহারে তৈরি। কয়েকবার চুরি করে নিয়ে গিয়েছিলো কেউ। বর্তমানে বুলেট প্রুফ কাচে ঘেরা ফ্রেমে বন্দী হয়ে কালাতিপাত করছেন রূপবতী সেই রমণী। তাঁর ভক্তের সংখ্যা নেহায়েতই কম নয়। তাঁরা কথায় কথায় তাঁকে স্মরণ করেন। এই যেমন করোনার বুস্টার ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রেও সবাই এই কালজয়ী নারীকে ভালোবাসায় স্মরণে রাখছেন। আমি বেশি সুন্দরী এটা এমনিতেই মজা করার জন্য বলেছিলাম। প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছর পূর্বে জন্ম নেওয়া এই মহিলা সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে অসম্ভব রূপবতীই শুধু নন আভিজাত্যের প্রতীকও বটে। এই শতাব্দীতে জন্মালে ভ্রুতে ট্যাটু করে নিতেন নতুবা পেন্সিলের ছোঁয়ায় পাখির ডানার মতো সুন্দর করে আঁকতেন। সম্পূর্ণ প্রসাধনবিহীন মোনা লিসার তুলনা কেবলই মোনা লিসা। ভালোবাসা থাকলো এই মহীয়সী রূপবতী রমণীর প্রতি। ফেসবুক থেকে