প্রকাশিত: Thu, Jun 1, 2023 4:38 AM
আপডেট: Fri, May 9, 2025 10:14 PM

সরকারবিরোধী আন্দোলনে ৩১ দফার যৌথ রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে বিএনপি ও সমমনারা

আমিনুল ইসলাম: সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। এই আন্দোলনে সফলতা আসলে এবং নির্বাচনে বিজয়ী হলে ৩১ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কারের যৌথ রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সমমনা দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে, দলীয় ফোরামে আলোচনার পর এই রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এই রূপরেখার যৌথ ঘোষণা দেয়া হবে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের এ রূপরেখা গত সোমবার বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রূপরেখার ‘যৌথ ঘোষণা’ দেয়ার বিষয়ে ভাবছেন নেতারা। এর আগে পৃথক পৃথকভাবে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কাররের বিষয়ে রূপরেখা নিয়ে বৈঠক করে বিএনপি। 

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের এই রূপরেখা জিয়াউর রহমান ঘোষিত ‘১৯ দফা’, বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত বিএনপি’র ‘ভিশন-২০৩০’ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ২৭ দফা কর্মসূচির আলোকে প্রণয়ন করা হয়েছে।  চুড়ান্ত রূপরেখায় বিএনপির আগের ২৭ দফার সঙ্গে সমমনাদের প্রস্তাব ও নতুন করে ৪টি দফা যুক্ত করে বিএনপি ৩১ দফায় আরো কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করেছে। নতুন এই খসড়ায় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান, ‘আইসিটি অ্যাক্ট-২০০৬, সন্ত্রাস বিরোধী আইন-২০০৯ এর প্রয়োজনীয় সংশোধন, স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট-১৯৭৪, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সকল কালাকানুন বাতিল’, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং তাদের সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যার যার অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা করা, সবার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড চালু করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া সকল ইউনিয়নে কৃষিপণ্যের জন্য সরকারি ক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করার বিষয়টি উঠে এসেছে। 

যৌথ ঘোষণার জন্য প্রস্তুত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখার ৩১ দফায় বলা হয়েছে- বিগত এক দশকের বেশি সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার হীন উদ্দেশ্যে অনেক অযৌক্তিক মৌলিক সাংবিধানিক সংশোধনী করেছে। একটি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ গঠন করে সকল বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী ও পরিবর্তনসমূহ পর্যালোচনা করে সংশোধন করা হবে। অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সাংবিধানিক সংস্কার করা হবে। সংবিধানে গণভোট ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে।

প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সকল মত ও পথের সমর্থনে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক ‘রেইন বো’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই জন্য অব্যাহত আলোচনা, মতবিনিময় ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎমুখী এক নতুন ধারার সামাজিক চুক্তিতে করা হবে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব